গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার কোটবাজালিয়া বাজার মোড়ে ড্রাম ট্রাকের তলায় পিষে হত্যা করা হয়েছে সাংবাদিক মঞ্জুর হোসেন মিলনকে।তার বাইক সম্পূর্ণ অক্ষত আছে। এটা কি হত্যাকাণ্ড না দুর্ঘটনা? দুর্ঘটনা হলে তার বাইক অক্ষত থাকতো না। তার পরিবার ও স্বজনদের দাবি, সাংবাদিক মিলনকে পরিকল্পিতভাবেই হত্যা করা হয়েছে।
শুক্রবার সকালে কাপাসিয়া উপজেলার কোটবাজালিয়া বাজারের পাশে ড্রাম ট্রাকের চাপায় ঘটনাস্থলেই নিহত হন মিলন। প্রথমে সড়ক দুর্ঘঠনা বলা হলেও তার মৃত্যুর ধরন দেখে সন্দেহ সৃষ্টি হয় স্থানীয় ও স্বজনদের।নিহত সাংবাদিকের শরীরের বিভিন্ন অংশ ছেঁচড়ে গেছে। অথচ যে মোটরসাইকেলে চালিয়ে যাওয়ার সময় দুর্ঘটনা ঘটেছে সেই মোটরসাইকেলটি রয়েছে সম্পূর্ণ অক্ষত। ঘটনায় জড়িত ট্রাকটি আটক করা গেলেও চালক পালিয়ে গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ঘটনার আগে সড়কের পাশে সাইট দেয়া নিয়ে মিলনের সঙ্গে তর্ক বিতর্ক হয়েছে ট্রাক চালকের। এরপরেই ট্রাক চালক তাকে ট্রাকের নিচে চাপা দিয়ে হত্যা করা হয়েছে।নিহতের ভাই কামাল হোসেন বলেন, আমি ঘটনাস্থলে এসে শুনেছি যে, ট্রাক চালকের সঙ্গে আমার ভাইয়ের কথা কাটাকাটি হচ্ছিল। এমন সময় তার ওপর ট্রাক চালিয়ে হত্যা করে চালক।
স্থানীয় একজন প্রত্যক্ষদর্শীও একই কথা বলেন, প্রথমে সাংবাদিক মিলনের মোটরসাইকেলকে চাপ দেয় ট্রাক চালক। এরপর পাশে বাইক থামিয়ে চালককে তিনি জিজ্ঞেস করেন, এইভাবে গাড়ি চালাও কেন? তখন চালক তার ওপর দিয়ে ট্রাক চালিয়ে দেয়। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে সাংবাদিক মিলন হত্যার বিচার দাবি করেছেন তার স্ত্রী রিমিন আক্তার।
পুলিশের পক্ষ থেকে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেয়া হয়েছে কাপাসিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লুৎফুল কবির ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের বলেন, ‘খুবই মর্মান্তিক ঘটনা। যতগুলো বিষয় এখানে এসেছে, সবই আমরা তদন্ত করবো। এরপর আইনগত ব্যবস্থা নেবো। তিনি বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে আমরা দুর্ঘটনার বিষয়ে কয়েকটি কথা শুনেছি। কিন্তু প্রত্যক্ষদর্শীর সঙ্গে আমাদের এখনো কথা হয়নি। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে আমরা ব্যবস্থা নেব। এদিন সকাল সোয়া দশটার দিকে গাজীপুর জেলা শহর থেকে কাপাসিয়া যাওয়ার পথে ভাকোয়াদি-কাপাসিয়া আঞ্চলিক সড়কের কোটবাজালিয়া বাজারের পাশে সাংবাদিক মিলন নিহত হন। নিহত মিলন কাপাসিয়া উপজেলার পাবুর গ্রামের মৃত আব্দুস সাঈদ শেখের ছেলে। তিনি দৈনিক ভোরের দর্পণ পত্রিকার গাজীপুর প্রতিনিধি এবং গাজীপুর সিটি প্রেসক্লাবের সভাপতি ছিলেন। নিজেও গাজীপুর দর্পণ নামে সাপ্তাহিক পত্রিকা প্রকাশ করতেন।
দুই যুগ ধরে সাংবাদিকতা করা মিলন এর আগে বৈশাখী টেলিভিশনের গাজীপুর প্রতিনিধি ছিলেন। নিহত সাংবাদিক মনজুর হোসেন মিলন দুই মেয়ে ও স্ত্রী রেখে গেছেন। তার মৃত্যুতে শুধু পরিবারে নয়, এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।